User:M. A. Halim/Some my Article in Bangla/শিশু অধিকার প্রসঙ্গে
শিশু অধিকার প্রসঙ্গে
প্রতিবছর বাংলাদেশে উদযাপিত হচ্ছে শিশু অধিকার সপ্তাহ। এ সময়ে শিশুদের নিয়ে বেশ ক'টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্ব কন্যা শিশু দিবস, বিশ্ব শিশু দিবস, পথশিশু দিবস ইত্যাদি। যেহেতু শিশুদের নিয়ে অনেকগুলো দিবস পালন করা হয়ে থাকে সে কারণে ১৯৯০ সাল থেকে বাংলাদেশে এ সময়কালে শিশু অধিকার সপ্তাহ উদযাপন করা হয়ে থাকে। 'বয়ঃসন্ধিকালে সৈনিক যারা_ বিশ্ব জয় করবে তারা' এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশে এবার শিশু অধিকার সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে। মানব সন্তান জন্মের পর থেকে কত বছর বয়স পর্যন্ত তাকে শিশু বলা যাবে, এই প্রশ্নের উত্তরে জীবনের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘের "শিশু অধিকার সনদ"-এ মতামত রাখা হয়েছিল, ১৮ বছর হবে শিশুর সর্বোচ্চ সময়কাল। আমাদের দেশে শিশুর বয়স নির্ধারণসহ শিশু উন্নয়ন বিষয়ক ছয়-সাতটি আন্তর্জাতিক চুক্তিতে স্বার করলেও প্রকৃতপ েশিশুর কোন সুনির্দিষ্ট বয়স দীর্ঘদিন ধরে নির্ধারিত ছিল না। এসব চুক্তির কোনটিতে শিশুর বয়স ধরা ছিল ১৪ বছর, কোনটিতে ১৬ আবার ত্রে বিশেষে ১৮ বছর। এ ছাড়াও আমাদের দেশের প্রচলিত আইনে শিশুর বিভিন্ন ধরণের বয়সের উল্লেখ রয়েছে। বাংলাদেশে ১৯৯৪ সালে প্রণীত জাতীয় শিশু নীতিতে শিশুর বয়স সীমা ১৪ বছর বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। বিভিন্ন মহলের প থেকে একাধিক স্তরে বিন্যস্ত শিশুর বয়সকালগুলোকে একটিমাত্র সময়কালকে শিশুর বয়স নির্ধারণ করার দাবি ওঠার পরিপ্রেেিত ২০০৩ সালের ১ জুন সরকার শিশুর একটি বয়স সীমা চিহ্নিত করেছে। সেখানে শিশুর বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয় ১৬ বছর সময়কে। প্রতিটি শিশু বেঁচে থাকার ও বিকশিত হওয়ার অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। ছেলেশিশুর মতো কন্যাশিশুরাও এ অধিকারের সমান দাবিদার। আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদের ৬ নম্বর ধারায় স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে, 'রাষ্ট্র শিশুর জীবন রা ও পূর্ণ বিকাশে সকল প্রকার দায়িত্ব পালন করবে।' এছাড়া ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সব শিশুর মৌলিক, মানবিক প্রয়োজন পূরণ আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকারও বটে। উল্লেখ্য, দেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশের বেশি শিশু। এসব শিশুর সুরায় রয়েছে জাতীয় শিশু নীতি, জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা, শিশু সনদসহ নানা ধরনের আইন। শিশুদের অধিকার রায় সরকারি-বেসরকারিভাবে প্রতি বছর নানা দিবস পালিত হয়। শিশুরা তাদের অধিকার পূরণের প্রত্যাশা করে সরকারের কাছে। সরকার আসে সরকার যায়; কিন্তু তাদের অধিকার আর পূরণ হয় না। নির্যাতনের করুণ কাহিনী রয়ে যায় একই তিমিরে। এদিকে শিশুদের চাহিদা ও প্রয়োজনের কথা ভেবে তৈরি হয়েছে শিশুদের জন্য একটি দলিল বা শিশু সনদ। ১৯৮৯ সালে ঘোষণাকৃত এ সনদ আন্তর্জাতিক আইনে পরিণত হয় ১৯৯০ সালে। এ সনদে প্রথম স্বারকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশও একটি। শিশু অধিকার সনদ প্রণয়নের পটভূমি
- ১৯২৩ সালে সেভ দি চিলড্রেনের প্রতিষ্ঠাতা ইগল্যান্টিং জেব শিশু অধিকারের জন্য সাতটি বক্তব্য বিষয় তৈরী করেছিলেন যা পরবর্তীকালে সেভ দি চিলড্রেন আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করে ।
- ১৯২৪ সালে তৎকালীন লীগ অব নেশনস্ - এ অধিকারগুলো গ্রহণ করে এবং " মানবজাতির সর্বোত্তম সেবা যা কিছু দেবার আছে তা শিশুরাই পাওয়ার যোগ্য" বলে ঘোষণা দেয়া হয়।
- ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষিত সনদে দুটি অনুচ্ছেদে শিশুদের অধিকার স্বীকার করে নেয়া হয়।
- ১৯৫৩ সালের অক্টোবর মাসে ইউনিসেফ ও আন্তর্জাতিক শিশু কল্যাণ ইউনিয়নের উদ্যোগে শিশুদের বিশেষ বিবেচনায় আনার ল্যে প্রথম 'বিশ্ব শিশু দিবস' উদযাপিত হয়।
- ১৯৫৯ সালের ২০ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে শিশুদের বিষয়ে ১০ টি অধিকার সম্বলিত একটি ঘোষণা পত্র প্রকাশিত হয়।
- ১৯৭৯ সালকে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক শিশু বর্ষ হিসেবে ঘোষণা দেয়।
- ১৯৯১ সালে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে শিশু অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ কমিটির প্রথম অধিবেশনে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোকে মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয় -
- বৈষম্যহীনতা: গোত্র, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা, ধর্ম, রাজনৈতিক, জাতীয়তা কিংবা সামাজিক পরিচয়, শ্রেণী, জন্মসূত্র কিংবা অন্য কোন মর্যাদা নির্বিশেষে প্রতিটি শিশুই কোন প্রকার বৈষম্য ছাড়াই এই ঘোষণায় বর্ণিত সব ধরণের অধিকার ও স্বাধীনতা ভোগ করবে।
- শিশুর সর্বোত্তম স্বার্থ: সরকারী ও বেসরকারী সমাজকল্যাণ প্রতিষ্ঠান, আদালত, প্রশাসন বা আইন প্রণয়নকারী ব্যক্তিবর্গ যে-ই হোক না কেন শিশু বিষয়ে যে-কোন ধরণের কার্যক্রমে শিশুর স্বার্থই হবে প্রথম ও প্রধান বিবেচনার বিষয়।
- শিশুর বেঁচে থাকা ও বিকাশ: প্রতিটি শিশুর বেঁচে থাকার জন্মগত অধিকারকে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ স্বীকৃতি দেবে। অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র শিশুর বেঁচে থাকার এবং উন্নয়নের জন্য যথাসম্ভব সর্বাধিক নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করবে।
- শিশুর অংশগ্রহণ: প্রতিটি শিশু তাদের বক্তব্য/ মতামত দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে বা সম্ভব হলে বাস্তব কাজে অংশ নিয়ে সমাজের বিভিন্ন েেত্র অংশগ্রহণ করতে পারে। তবে সকল েেত্র শিশুদের অংশগ্রহণ অবশ্যই তাদের স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হতে হবে।
- জবাবদিহিতা: ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র ও সংগঠন প্রত্যেকে যে কোন অবস্থান থেকেই শিশু অধিকার সংরণে ভূমিকা রাখতে পারে। এ েেত্র জবাবদিহিতার জন্য প্রত্যেকে প্রত্যেকের কাছে দায়বদ্ধ।
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের অধীনে শিশু অধিকারসমূহ
- অপরাধের েেত্র ন্যায় বিচার
- গ্রেফতার ও দন্ড থেকে সুরা
- দত্তক গ্রহণ ও প্রদান
- পাচার থেকে সুরা
- পরিবার বঞ্চিত শিশুর েেত্র সঠিক যত্ন
- মর্যাদা ও সুনাম
- মানবিক আচরণ
- শিক্ষা লাভ
- শোষণ থেকে রক্ষা
- সামাজিক নিরাপত্তা
- অবসর ও বিনোদন
- চিকিৎসা পরিচর্যা
- পারিবারিক সংহতি
- প্রতিবন্ধী শিশু
- বেঁচে থাকা
বাংলাদেশে শিশু পরিস্থিতি
- মৃত্যু হার: ১৯৯০ সালে এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এক হাজার শিশুর মধ্যে জন্মের কয়েক ঘন্টা পর ১২টি শিশু, জন্মকালীণ জটিলতায় ৮টি, অকালপক্কতার কারণে ৪টি শিশু মারা যায়, জন্মের পরবর্তী এক সপ্তাহে আরও ২৩টি শিশু অকালপক্কতায় ১৬টি এবং ধনুষ্টংকারে ৭টি শিশু মারা যায়।
- শিক্ষা: ১৯৯৬ সালে প্রাঃ, শিঃ, অঃ -এর এক জরিপে দেখা গেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার উপযুক্ত (৬-১০বছর বয়সী) শিশুর সংখ্যা ১কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার, ১৯৯৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯৬%, ১৯৯১ এ হার ছিল ৭৭%।
- উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা: বিদ্যালয়ের বাইরে থাকা, ঝরে পড়া অথবা শিার বয়স পার হয়ে গেছে এমন শিশুর সংখ্যা ১কোটি ৯০ লাখ। এদের জন্য সরকার উপ-আনুষ্ঠানিক শিা চালু করেছে, ৪৩৫টি এনজিও উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পরিচালনা করছে।
- লিঙ্গ বৈষম্য: সমাজ ব্যবস্থায় পরিচিত বৈশিষ্ট্য ঃ পরিবার তথা সমাজের প্রায় প্রতিটি স্তরে ছেলের তুলনায় মেয়ে শিশুরা বিভিন্ন অধিকার ভোগ করার েেত্র বৈষম্যের স্বীকার হয়।
- শিশুশ্রম: শিশুশ্রম নিষিদ্ধ হলেও বেঁচে থাকার নির্মম প্রয়োজনে বিপুলসংখ্যক শিশু ুদ্র কারখানা, ওয়ার্কশপ, খাবারের দোকান, বাস-স্কুটার, গৃহস্থালীসহ বিভিন্ন শ্রমে নিযুক্ত হতে বাধ্য হচ্ছে।
- পুষ্টি ও স্বাস্থ্য পরিচর্যা: ২০০৫ সালের বিশ্ব শিশু পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুসারে অপুষ্টির কারণে প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে ৫ বৎসর পূর্ণ হওয়ার আগেই মারা যায় ৬৯টি শিশু।
- পথশিশু: সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শিশু ঃ দারিদ্র, সংসার ভেঙ্গে যাওয়া, বাড়ী পালানো, যৌন নিপীড়নসহ বিভিন্ন কারণে শিশুরা পথশিশু হয়ে ওঠে। এরা রেল ও বাস ষ্টেশন, পার্ক, খোলা আকাশের নীচে ইত্যাদি ঝুঁকিপূর্ণ যায়গায় জীবন যাপন করে।
- বাংলাদেশে শিশু শোষণ
- বাল্যবিবাহ
- প্রতিবন্ধী শিশু
- পতিতালয়ে বেড়ে ওঠা শিশু
- কর্মে নিয়োজিত শিশু
- গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশু
- গার্মেন্টস শ্রমিক
- বিড়ি শিল্পে শিশু শ্রমিক
দেশে শিশু অধিকার লঙ্ঘনের চিত্র এখনো স্বাভাবিক হয়নি। নানা কারণে শিশুদের নিয়ে তাদের পরিবারের দিন কাটে আতঙ্কে। গত কয়েক বছরের তুলনায় সাম্প্রতিক সময়ে শিশুর প্রতি অপরাধ প্রবণতা কমে এলেও এখনো চলছে শিশু নির্যাতন। এখনো হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, বখাটেদের উৎপাত, পাচার, অস্বাভাবিক মৃতু্য, এসিড নিপেসহ শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। ইউনিসেফের 'বিশ্ব শিশু পরিস্থিতি ২০০৬' অনুসারে, দেশে দেড় কোটির বেশি শিশু সুরার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে সমাজের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ দেশের প্রায় ৭০ লাখ শিশু নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত। ৫০ লাখ শিশু বস্তিতে বসবাস করছে। ৩০ লাখের বেশি শিশু শিৰা সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বছরে বাংলাদেশের ১২ লাখ শিশু বিভিন্ন দেশে পাচারের শিকার হচ্ছে। ১৪ লাখ শিশু শারীরিক প্রতিবন্ধী আর ১ হাজারেরও বেশি শিশু দেশের বিভিন্ন জেলে আটক রয়েছে। গত কয়েক বছরে শিশু হত্যার কয়েকটি লোমহর্ষক ঘটনা এ দেশের মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছিল। এরপর দ্রম্নত বিচার আইনের আওতায় শিশু হত্যার ঘটনায় আদালতের বেশ কয়েকটি রায়ে মানুষ কিছুটা আশ্বস্ত হলেও সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম (বিএসএএফ) রিসোর্স সেন্টারের তথ্য অনুসারে দেশে এখনো চলছে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণসহ লোমহর্ষক ঘটনা। তবে আগের তুলনায় এর ভয়াবহতা কিছুটা কমে এসেছে। সূত্র মতে, গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এক বছরে দেশে ৩ হাজার ৬৮টি শিশু নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এ সময়ে দেশে খুন হয়েছে ১৭৬টি শিশু। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ২৪২টি, অপহৃত হয়েছে ৭৭টি, নির্যাতিত হয়েছে ৬০টি, আত্মহত্যা করেছে ৮৬টি শিশু। এছাড়া শিশুরা হত্যা চেষ্টা, এসিড নিপে, বখাটেদের অত্যাচার, কটূক্তিসহ নানান অপরাধের শিকার হয়েছে। ২০০৬ সালে শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ৯৩৬টি। এর আগে ২০০১ সালে মোট ৩ হাজার ৭৭৬টি শিশুর অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছিল। ২০০২ সালে তা দ্বিগুণ হয়ে ৭ হাজার ৪৪৫-এ এবং ২০০৩ সালে ৭ হাজার ২৬৮-এ দাঁড়িয়েছিল। ২০০২ সালে শিশু হত্যার ঘটনায় দেশে এক ভয়াবহ আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল। ওই সময় বাপ্পি, তৃষা, রত্না, ডন, রম্নবেল ও নওশিনসহ শিশু হত্যার লোমহর্ষক ঘটনায় সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল প্রতিটি পরিবার। শিশুর সঙ্গে খেলা করা নিয়ে শিশু রত্নাকে, ডনকে যৌতুকের লোভে, শিহাবকে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য হত্যা করা হয়েছিল। বাবার কোলে নিহত হয়েছিল শিশু নওশিন। এসব হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ তখন ােভে ফেটে পড়েছিল। এ দেশ শিশুদের বসবাসের অনুপযোগী মনে করে ধিক্কার জানিয়েছিল বিবেকবান মানুষ ও বিশ্ববাসী। এরপর থেকে সরকারও তৎপর হয়েছে শিশু হত্যা ও নির্যাতন বন্ধে। এদিকে এখনো বন্ধ হয়নি শিশু শ্রম। আইএলওর সহযোগিতায় সর্বশেষ সরকারি এক হিসাবমতে, দেশে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৭৯ লাখ ৮ হাজার। তবে বর্তমানে এ সংখ্যা ১ কোটির ওপরে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। বিএসএএফের তথ্যমতে দেশে ৪৩০ ধরনের শিশু শ্রম রয়েছে। এর মধ্যে ৬৭টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১১টি গুরুতর ঝুঁকিপূর্ণ। দেশে শিশু পাচারের ঘটনাও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। এছাড়া হাজার হাজার প্রতিবন্ধী শিশু তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। প্রায় ৬৫ শতাংশ প্রতিবন্ধী পথশিশু শিার সুযোগ পাচ্ছে না। পথশিশুদের অবস্থাও ভয়াবহ। সমাজসেবা অধিদফতরের ২০০১ সালের এক জরিপমতে, দেশে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ২২৬টি পথশিশু রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় রয়েছে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৮০৭টি। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা মতে, এ সংখ্যা প্রায় ২০ লাখের কাছাকাছি। এ সব দুঃখজনক চিত্র বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে আমাদের দেশে। শিশু অধিকার বিষয়ক অনুষ্ঠানমালায় শিশু অধিকার রার কথা বলে বলে মুখে ফেনা তুললেও অবস্থা যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। যদিও সরকার ইতোমধ্যেই শিশু বান্ধব অনেক আইন ও নীতি প্রণয়ন করেছে, অনেকগুলো বাস্তবধমর্ী পদপেও নেওয়া হয়েছে। বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থাগুলোও শিশু অধিকার রায় কাজ করে যাচ্ছে কিন্তু তারপরও অবস্থা যে তিমিরে সেই তিমিরে রয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেন? তাহলে কি আমরা বড়রা যেসব পরিকল্পনা করছি ছোটদের জন্য তা' তেমন কার্যকরী হচ্ছে না? আমাদের মনে হয় শিশুদের মঙ্গলে যে সব পদপে নেওয়া হচ্ছে তা' শিশুদের-ই পরিকল্পনা করা উচিৎ। বড়রা শুধুমাত্র তাদের ভাবনা-চিন্তার সমন্বয় ঘটিয়ে তাদের তাদের দিয়েই কর্মপরিকল্পনা তৈরি করাতে পারলে অবস্থার পরিবর্তন আসতে পারে।