যজ্ঞডুমুর

From WikiEducator
Jump to: navigation, search

'যজ্ঞডুমুর'


Dumur.jpg Dumur1ab.jpg

যজ্ঞডুমুর

মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ


উদ্ভিদের নাম : যজ্ঞডুমুর, Zagga Dumur

স্থানীয় নাম : যজ্ঞডুমুর

ভেষজ নাম : Ficus racemosa Linn.

ফ্যামিলি:- Moraceae

ব্যবহার্য অংশ : এই গাছটির ফল, মূল, পাতা, গাছের ও মূলের ছাল (ত্বক্)ও (ক্ষীর )দুধের মত আঠা বা নির্যাস)- সব অংশই ঔষধার্থে ব্যহার করা হয়ে থাকে।

রোপনের সময় : বর্ষাকাল

উত্তোলনের সময় : বছরের যে কোনো সময় উত্তোলন করা যায়।

আবাদী/অনাবাদী/বনজ : আবাদী, অনাবাদী বনজ সব ধরনের হয়ে থাকে।

চাষের ধরণ : বীজ ও কলম থেকে গাছ উৎপন্ন হয়

উদ্ভিদের ধরণ: বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ।


পরিচিতিঃ এ্টি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। আমাদের দেশে তিনটি জাতির নাম পাওয়া যায়- উদুম্বর, কাকোদুম্বুর ও নদীউদুম্বর। আরবে এটি আঞ্জির নামে পরিচিত।

ব্যবহার


Dumur2.jpg

এই গাছটির ফল, মূল, পাতা, গাছের ও মূলের ছাল (ত্বক্)ও ক্ষীর (দুধের মত আঠা বা নির্যাস)- সব অংশই ঔষধার্থে ব্যহার করা হয়ে থাকে।

ক্ষীর- (দুধের মত নির্যাস বা আঠা)ঃ শরীরের কোন জায়গায় গ্রন্থিস্ফীতিতে (Gland inflammation) লাগিয়ে দিলে প্রদাহ ও ব্যাথা কমে যায় এবং বসেও যায়, এটা লাগিয়ে তার উপর লবণ ছড়িয়ে দিলে আরো কাজ হয়। অর্শরোগে ও অতিসারে খাওয়ার জন্য একে ব্যহার করা হয়।

পল্লবঃ- এই অংশটি পল্লীবাসির ও চিকিৎসকগণের বিশেষভাবে কাজে আসবে, এ থেকে ঘনসারও (Semi-solid extract) তৈরী করে রাখা যায়। ঘনসার প্রস্তুতিবিধিঃ- ৫/৭ ইঞ্চি সরু ডাল সমেত কাঁচা পাতা ছেঁচে নিয়ে সিদ্ধ করে সেই জল ছেঁকে নিয়ে নরম জ্বালে আবার পাক করতে করতে ঘন হয়ে চিটে গুড়ের থেকেও একটু মোটা বা ঘন করে (লেই বা কাই) করে রাখতে হবে। এটা করে রাখলে মাত্রা মত ব্যবহার করার সুবিধে হবে। এতে অল্প মাত্রায় সোহাগা খৈ মেশালে নষ্ট হয় না।

ব্যবহারিক ক্ষেত্রে

১। কোন জায়গায় কেটে রক্তপাত হতে থাকলে - ঐ ঘনসার লাগালে রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে, ব্যথা হবে না এবং ওটাতেই সেরে যাবে।

২। বিষাক্ত পোকামাকড়ের কামড়ে: বিড়াল, ইঁদুর , বোল্তা, ভীমরুল বা কোন জানা -অজানা বিষাক্ত পোকামাকড়ের কামড়ে অথবা কুকুরের আঁচড়ে(আঁচড় দিয়েছে এমন ক্ষেত্রে) ওটা লাগালে জ্বালা-যন্ত্রনার উপশম হবে এবং বিষোবে না।

৩। দেহের কোন জায়গা থেতলে গেলে বা আঘাত লেগে ব্যথা হলো ওটায় ২ গুণ জল মিশিয়ে পেইন্টের মত লাগালে ব্যথা ও ফুলা দুই-ই কমে যাবে।

৪। ফোঁড়ায়ঃ- এই ঘনসার ৪গুণ জলে গুলে ন্যাকড়া বা তুলোয় লাগিয়ে বসিয়ে দিলে ওটা ফেটে পুঁজ-রক্ত বেরিয়ে যাবে। এই ভাবে ব্যবহারে কয়েকদিনেই সেরে যাবে।

৫। মুখের দুর্গন্ধ, দাঁতের গোড়া বা মাড়ী ফোলা ও ব্যথা, গলায় বা মুখের ক্ষতে ঃ-এই ঘনসারে আটগুণ জল মিশিয়ে কবল ( Gargle) করলে অথবা মুখে কিছুক্ষণ রেখে দিলে ২/ ১ দিনেই উপশম হবে এবং এইভাবে ব্যবহারেই সেরে যাবে।

৬।স্ত্রীরোগজনিত স্রাব ঃ- ক্ষেত্র হিসেবে ৮-১২ গুণ জলে গুলে ডুস দিলে স্ত্রীরোগজনিত স্রাব নিশ্চিত প্রশমিত হয়। আভ্যন্তরিণ প্রয়োগ ( Internal application):- উর্দ্ধবগ রক্তপিত্তে (Haemoptysis), রক্তার্শে (Bleeding piles), ও রক্তস্রাবে ১২ গ্রেণ আন্দাজ মাত্রায় ২ আউন্স বা এক ছটাক জলে মিশিয়ে দিনে ২/৩ বার খেলে বিশেষ উপকার হয়।

পিত্তবিকৃতিজনিতঃ-ডুমুরের পাতার গুঁড়ো মধুর সঙ্গে খেলে পিত্তবিকৃতিজনিত রোগ (Bilious affection) নিরাময় হয়।

বসন্তে (Small pox)ঃ--যজ্ঞডুমুরের পাতার উপর যে অর্বুদ (Gall) হয় (একে আয়ুর্বেদের ভাষায় বলা হয় শুনাগর্ভ), সেটা দুধে ভিজিয়ে মধুর সঙ্গে বসন্তে (Small pox) ব্যবহার করলে বিশেষ উপকার হয়।

মাহমুদুল হক ফয়েজ

মুঠোফোনঃ ০১৭১১২২৩৩৯৯

e-mail:- mhfoez@gmail.com