দেশে বসে বিদেশে আঁকুন
দেশে বসে বিদেশে আঁকুন, গ্রাফিক ডিজাইন শেখা
দেশে বসে বিদেশে আঁকুন
নুরুন্নবী চৌধুরী | তারিখ: ২৪-১১-২০১০
ডিজাইন বা আঁকাআঁকিটা হবে ঢাকায় বসেই, তবে কাজটা হয়তো যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো দেশের। গ্রাফিক ডিজাইনের এমন আউটসোর্সিং কাজের সুযোগ অনেক
ছবি: সৈকত ভদ্র
আপনার মধ্যে যদি সৃজনশীলতা থাকে, তবে দেশে বসেই বিদেশে আঁকাআঁকির কাজ করতে পারেন। প্রযুক্তির প্রতিনিয়ত উন্নতি আর নানা ধরনের সুবিধার পাশাপাশি বদলে যাচ্ছে কাজের ক্ষেত্রও। নতুন নানা ক্ষেত্র সৃষ্টি হচ্ছে কাজের, যেখানে রয়েছে নানাভাবে কাজ করার সুবিধা। এককভাবেও করা যায় অনেক কাজ।ইন্টারনেট যখন হাতের মুঠোয়, তখন ঘরে বসে আয় করাটা তেমন কঠিন নয়। কম্পিউটার প্রযুক্তির কারণে যারা একটু একটু সৃজনশীল তাদের পক্ষে গ্রাফিক ডিজাইন করাটা এখন বেশ সহজ। আর ইন্টারনেটের কারণে আউটসোর্সিং কাজের যে ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, সেটিতে গ্রাফিক ডিজাইনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।ব্যক্তিগতভাবেই এ কাজ শুরু করা সম্ভব।
গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ
কম্পিউটারনির্ভর গ্রাফিক ডিজাইন অনেকেই এখন করে থাকেন নানাভাবে। সাধারণত মুদ্রণ ও ওয়েব মাধ্যমে নানা ধরনের কাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে গ্রাফিক ডিজাইন। দেশে বসেও দেশের বাইরের গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ করা যায় এখন।গড়ে তোলা যায় নিজের পেশা। শুরুর দিকে এ খাতে কাজের ক্ষেত্র সীমিত হলেও ধীরে ধীরে তা বাড়ছে। এখন এ ধরনের কাজ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও করছে, যেখানে চাকরিও পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধাপের গ্রাফিকসের কাজের মধ্যে সহজ কাজগুলো হচ্ছে নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে ছবি সম্পাদনা, ছবি ঠিকঠাক করা ইত্যাদি। এসব করার জন্য ওই সফটওয়্যারের ওপর দক্ষতাই যথেষ্ট। তবে শুধু এসবই নয়, ওয়েবসাইট ডিজাইনসহ গ্রাফিকসের বিভিন্ন কাজও এখন হচ্ছে। গণমাধ্যমের মধ্যে মুদ্রণ, ওয়েবসাইটসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ব্যবহূত হচ্ছে এ ধরনের কাজ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এ কাজগুলো অন্য দেশ থেকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে করিয়ে থাকে। যেসব দেশ এ কাজগুলো করে থাকে, তার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। তবে এককভাবে এ কাজগুলো করা কিছুটা কঠিন। এ জন্য যারা গ্রাফিকসের কাজে দক্ষ তারা এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হয়ে শুরুটা করাই ভালো বলে অভিজ্ঞরা মনে করেন।
রয়েছে যথেষ্ট সম্ভাবনা
ধীরে ধীরে বাড়তে থাকা কাজের মধ্যে বর্তমানে গ্রাফিক ডিজাইনে রয়েছে যথেষ্ট সম্ভাবনা। গ্রাফিকসের নানা ধরনের কাজের মধ্যে রয়েছে ছবি সম্পাদনা (ক্লিপিং পাথ), ছবির দাগ দূর করা এবং ছবির বিভিন্ন ধরনের সম্পাদনা ও সংযুক্তি (ইমেজ এনহান্সমেন্ট), ওয়েবসাইটের টেম্পলেট তৈরি, ওয়েবসাইটের পটভূমি, ব্যানার, বাটন, আইকন, নিবন্ধন ও লগ-ইন ফরম, বিজনেস কার্ড ইত্যাদি। জানালেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান জানালা বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামজিদ সিদ্দিক। তিনি জানান, এ কাজের জন্য অ্যাডবি ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর আর নির্দিষ্ট কিছু সফটওয়্যারের কাজ জানাই যথেষ্ট।
যেভাবে করবেন
গ্রাফিক ডিজাইন করার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা খুব বেশি যে লাগবে তা নয়। সাধারণভাবে মাধ্যমিক পর্যায় শেষ করেও এ কাজে যুক্ত হওয়া যায়। তবে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পর এ কাজ করা সহজ হয়। কারণ কাজের ক্ষেত্রে নানা সময়ে ইংরেজি ভাষার ব্যবহার করতে হয়। তাই ইংরেজিতে দক্ষতা থাকা ভালো। প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট সফটওয়্যারগুলোর কাজ জানা থাকলে প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাওয়া সহজ হয়। পরবর্তী সময়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ হয়ে ওঠা সম্ভব। শুধু গ্রাফিকসের কাজ পাওয়া যায় এমন ওয়েবসাইট রয়েছে বেশ কিছু। এসব ওয়েবসাইটে গ্রাফিকস-সংক্রান্ত কাজগুলো জমা রেখে আয় করা যায় আবার নির্দিষ্ট কাজও পাওয়া যায়। এমনই একটি ওয়েবসাইট হচ্ছে থিমফরেস্ট (http://www.themeforest.net)। যেখানে একজন ডিজাইনার ওয়েবসাইটের টেম্পলেট বা পূর্ণাঙ্গ ডিজাইন বিক্রি করতে পারেন। শুধু গ্রাফিকসের নানা ধরনের কাজ নিয়ে রয়েছে গ্রাফিক রিভার (http://www.graphicriver.net) সাইট। এ ধরনের আরও কিছু ওয়েবসাইটের মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাশডেন (http://www.flashden.com), অডিওজঙ্গল (http://www. audiojungle.net), ভিডিওহেইভ (http://www.videohive.net) ইত্যাদি। এ পাঁচটি ওয়েবসাইট নিয়ে গঠিত হয়েছে এনভাটো মার্কেটপ্লেস। এনভাটো (http://www.envato.com) মার্কেটপ্লেসের এ পাঁচটি ওয়েবসাইটের যেকোনো একটিতে কিছু তথ্য দিয়ে বিনা মূল্যে নিবন্ধনের মাধ্যমে সবগুলো সাইটের সদস্য হওয়া যায়। সদস্য হওয়ার পর এসব সাইটের সম্পূর্ণ টেম্পলেট ডিজাইন করতে হবে না, বরং একটি সাইটের বিভিন্ন গ্রাফিকস আলাদা আলাদাভাবে তৈরি করে বিক্রি করা যাবে।এসব সাইটের নানা ধরনের কাজের মধ্যে রয়েছে ওয়েবসাইটের ব্যাকগ্রাউন্ড, ব্যানার, লগইন ফরম, বিজনেস কার্ডসহ আরও বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন তৈরির কাজ। এসব সাইটে একটি ডিজাইন একাধিকবার বিক্রিও করা যায়। সাইটগুলোর অসংখ্য বিভাগের মধ্য থেকে নিজের ইচ্ছেমতো যেকোনো ধরনের ডিজাইন তৈরি করে বিক্রি করা যাবে।তবে সাইটের নিয়ম অনুযায়ী ডিজাইন জমা দেওয়া জরুরি। শুধু ডিজাইন নিয়ে আরেকটি ওয়েবসাইট হলো নাইন্টিনাইন ডিজাইনস (http://www.99designs.com)। এ সাইটটি শুধু ডিজাইনারদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। এই সাইটে ওয়েবসাইট ডিজাইন, লোগো ডিজাইন, বাটন ও আইকন ডিজাইন, টি-শার্ট ডিজাইন ও ব্যানার ডিজাইনের কাজ পাওয়া যায়। এখানে প্রত্যেকটি ডিজাইন সম্পন্ন করার জন্য ক্রেতা বা ক্লায়েন্ট একটি উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। প্রতিযোগিতায় যে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারে এবং ক্রেতার নির্দেশ অনুযায়ী ডিজাইনাররা ডিজাইন তৈরি করে। এতে সহজে নিবন্ধনের মাধ্যমে নির্দেশনা অনুযায়ী ডিজাইন তৈরি করতে হয়।
শুরু করতে পারেন নিজেই
যাঁদের দক্ষতা রয়েছে এ ধরনের কাজে, তাঁরা নিজেরাই শুরু করতে পারেন এ কাজটি। এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০ জনের একটি দল নিয়ে নিজেই শুরু করতে পারেন এই কাজ। তবে এ ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল ছাড়াও কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ জরুরি। প্রয়োজনীয়সংখ্যক কম্পিউটারের পাশাপাশি ইন্টারনেট সংযোগ-সুবিধা থাকতে হবে। তবে সবার আগে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা বিশেষভাবে জরুরি। মুক্ত পেশাজীবীদের জন্য বিভিন্নভাবেই কাজ বাড়ছে। নানা ধরনের কাজও পাওয়া যাচ্ছে, যার মধ্যে গ্রাফিক ডিজাইনের চাহিদাও প্রচুর, বললেন ওয়েবক্রাফট লিমিটেডের পরিচালক জাকারিয়া চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রথমে এককভাবে শুরু করে পরবর্তী সময়ে পেশা হিসেবে নেওয়ার ক্ষেত্রে এ কাজে রয়েছে যথেষ্ট সম্ভাবনা।
সময় এগিয়ে যাওয়ার
নানা ধরনের কাজের মধ্যে পেশা গড়ার জন্য অন্যতম একটি উপায় বলা যায় গ্রাফিকস ডিজাইনের কাজকে। দেশে কিংবা দেশের বাইরে কাজ করার ক্ষেত্র থাকায় এতে সহজে ভালো করা যাবে এবং নিজেকে গড়ে তোলা যাবে নিজের মতো করে। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে এ কাজটি সহজে করা সম্ভব বলে যে কেউ নিজের আগ্রহের মাধ্যমে এ কাজে যুক্ত হতে পারেন। যথেষ্ট সম্ভাবনাময় এ খাতে কাজের ক্ষেত্রও বাড়ছে ধীরে ধীরে। এখন প্রয়োজন নিজেকে কাজের সঙ্গে তৈরি করে নেওয়া। তাহলে সহজেই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।
গ্রাফিক ডিজাইন শেখার কিছু ওয়েবসাইট
http://www.photoshoproadmap.com
http://www.photoshoptopsecret.com
http://www.planetphotoshop.com
--Foez 18:00, 3 December 2010 (UTC)