জাল দলিল

From WikiEducator
Jump to: navigation, search

নোয়াখালীর উপকূলীয় খাস জমির জটিলতা-৪

নোয়াখালীর উপকূলীয় খাস জমির জটিলতা-৪

'মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ


‘জাল দলিল’ নোয়াখালীর ভূমি ব্যবস্থাপনাকে জটিল করে তুলেছে

‘জাল দলিল’ উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীতে দুষ্ট ক্ষতের মতো বিরাজ করছে। বিদ্যমান ভূমি আইন ও ভূমি প্রশাসনের নানান অসংগতির সুযোগ নিয়ে একশ্রেণীর সংঘবদ্ধ চক্র ‘জাল দলিল’ তৈরি করে নোয়াখালীর ভূমি ব্যবস্থাপনাকে জটিল করে তুলেছে। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত মালিকরা হয়রাণির শিকার হচ্ছেন; কখনোবা অবৈধ দখলদাররা মালিক বনে যাচ্ছেন। এদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সহযোগিতা করছে ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস ও স্যাটেলমেন্ট অফিসের এক শ্রেণীর দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নাকের ডগায় এ ধরনের কাজ হলেও কেউ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নিতে পারছেনা। ভূমি রেজিস্ট্রেশন আইন যুগোপযোগী করা এবং এর সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা জরুরি বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।


শত বছরের পুরানো রেজিস্ট্রি আইন

১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রি আইনে বলা হয়েছে কোনো সম্পত্তি হস্তান্তর কিংবা বিক্রি যদি একশ’ টাকায় হয় অর্থাৎ কোনো সম্পত্তির মূল্য যদি একশ’ টাকার মধ্যে হয় তাহলে সে সম্পত্তি কেনাবেচায় কোনো রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন হবে না; সংগত কারণে রেজিস্ট্রি অফিসে এ ধরনের জমির কোনো প্রমাণ রাখার প্রয়োজন হবেনা। আইনের সীমাবদ্ধতার সুযোগ নিয়ে এ ক্ষেত্রে যে কেউ কোনো বিতর্কিত জমির ত্রিশ চল্লিশ বছর পূর্বের একটি কাগজে একশ’ টাকার কম মূল্য দেখিয়ে ‘লিখিত দলিল’ বানিয়ে ঐ জমির মালিকানা দাবী করতে পারবে। এ বিষয়ে আইনে বলা হয়েছে ত্রিশ বছর পর্যন্ত স্যা আইনের আওতায় যে কারো দস্তখত চ্যালেঞ্জ করা যাবে, কিন্তু ত্রিশ বছর পর সেটি আপনাতেই বৈধ হয়ে যাবে। তার মানে আজকে যদি কেউ ত্রিশ বছর পূর্বের কোনো কাগজ দেখিয়ে নাম দস্তখত করে তাহলে ঐ দলিলের বিরুদ্ধে আপিল করার কোনো সুযোগই থাকলো না। আইনের ফাঁক ফোঁকর দিয়ে এভাবে অবৈধ দলিল তৈরির সুযোগ রয়ে গেছে। নোয়াখালী অঞ্চলে এরকম জাল দলিল নিয়ে অসংখ্য মামলা চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।


যেভাবে জাল দলিল তৈরি হয়

নোয়াখালী অঞ্চলে একটি সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্র জাল দলিল তৈরির কাজে সক্রিয় রয়েছে। আশি/নব্বই বছর পূর্বে নোয়াখালীর যে জমির দাম ছিল আশি টাকা এখন সেই জমির মূল্য দাঁড়িয়েছে পঞ্চাশ ল টাকার বেশি। বিবাদমান কোনো জমির একশ’ টাকার নীচে দেখিয়ে অনেকেই দাবী করে বসছে ঐ ভূমি তার পূর্ব পুরুষ ৮০ কিংবা ৯০ টাকায় খরিদ করেছে। এ রকম পরিস্থিতিতে কারো কারো দাবী টিকেও যাচ্ছে। এসব ঘটনায় তারা আশ্রয় নিচ্ছে জাল দলিল তৈরির জালিয়াত চক্রের কাছে; এরা মোটা অঙ্কের বিনিময়ে জাল দলিল তৈরি করে দিয়ে থাকে। জালিয়াত চক্র পুরোনো দিনের কাগজ অথবা পুরাতন স্ট্যাম্প কিংবা কার্টিজ পেপার সংগ্রহ করে জাল দলিল বানিয়ে দিচ্ছে। এই ‘জাল দলিল’ এতটাই নিখুঁত যে প্রায় ক্ষেত্রে আদালতও তা গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে।

এই পুরানো দলিল তৈরির লাভজনক ব্যবসা(!) যারা করে তারা অনেক দিনের পুরানো কাগজ সংগ্রহ করে রাখে। কারণ ত্রিশ চল্লিশ বছরের পুরানো কাগজ বর্তমান সময়ের কাগজের মতো হবে না। এসব পুরানো ব্যবহৃত দলিল ভালোভাবে ধূয়ে কালি উঠিয়ে সে কাগজে আবার নতুন করে লেখা হয়। এর জন্য একটি বিশেষ কেমিকেল ব্যবহার করা হয়। পুরানো এই দলিলের কাগজে পুরানো নম্বর থাকায় এটি আরো গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠে। এছাড়া তারা নতুন কাগজকেও পুরোনো কাগজ হিসেবে চালানোর কৌশল গ্রহণ করে; এ ক্ষেত্রে তারা কাগজটিকে অল্প আগুনের তাপে বিশেষ কায়দায় ধরে কিংবা বিশেষভাবে ধোঁয়া দিয়ে পুরানো কাগজের আদল তৈরি করে। তারপর ঐ কাগজকে উইপোকার ঢিবিতে রেখে বুঝানো হয় এই দলিল অনেক পুরানো এবং দলিলটি উইপোকায় খেয়ে ফেলেছে। আবার কাগজের স্থানে স্থানে বিশেষভাবে কেমিকেল দিয়ে ফুটো করে বিশ্বাস আনা হয় যে উইপোকা দলিল নষ্ট করে ফেলেছে। এই রকম দলিল তৈরি করলে জালিয়াত চক্রের কাছ থেকে উচ্চ মূল্যে গ্রাহকরা তা কিনে নেয়। যারা জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত তারা গ্রাহকদের মনমতো দলিল বানিয়ে থাকে। এর জন্য দশ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকাও নেয়া হয়। এ ধরনের জাল দলিল নোয়াখালীর কোর্ট কাছারীতে প্রায়ই দেখা যায়।

নোয়াখালীর আদালতপাড়ায় একটি মুখরোচক গল্প প্রচলিত আছে যে, শীতকালে প্রচন্ড ঠান্ডায় কাঁপা কাঁপা হাতে সই জাল করা হয়। এ ধরনের জাল দলিলকে ‘মাঘ মাসের দলিল’ বলা হয়।


গলদের সূত্রপাত যেখান

বিদ্যমান ভূমি প্রশাসন ও আইনের মধ্যেই মূলত: জাল দলিল করার সুযোগ রয়ে গেছে। বিদ্যমান ভূমি প্রশাসন তিন ভাগে বিভক্ত।

  • ভূমি মালিকানার রেকর্ড সংরণ,
  • রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি,
  • জরিপ ও রেকর্ড সংশোধন।

বাস্তব ক্ষেত্রে প্রায়ই দেখা যায় যে এক অফিসের রেকর্ডের সাথে আর এক অফিসের কোনো মিল নেই। ভূমি প্রশাসন জমির মালিকানা স্বত্ব সংরণ করে; ভূমি প্রশাসন কাজ করে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধিনে। আবার ভূমি হস্তান্তর কিংবা রেজিস্ট্রেশনের দায়িত্বে নিয়োজিত রেজিস্ট্রি অফিস কাজ করে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে। ফলে রেজিস্ট্রেশন কিংবা দলিল দস্তাবেজ সংরণ বিষয়ে কোনো জটিলতা দেখা দিলে উভয় মন্ত্রণালয়ের নীরব ভূমিকা ভুক্তভোগীদের ভোগান্তি আরো বাড়িয়ে দেয়।

রেজিস্ট্রি অফিসে একজন সাব রেজিস্ট্রার জমির ক্রয় বিক্রয়ের দলিল কোনো প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়াই নিবন্ধন করতে পারেন। তিনি দলিলের মালিকানা শুদ্ধ কি অশুদ্ধ তা যাচাই বাছাই করতে বাধ্য নন। এ কারণেই সারা দেশের মতো নোয়াখালীতেও জমির জাল দলিলের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই জাল দলিলের কারণে এ অঞ্চলে অসংখ্য মামলা মকদ্দমার উদ্ভব হচ্ছে। জালদলিল এখন দূরারোগ্য ক্যান্সারের মতো নোয়াখালীর সমাজ দেহে ছড়িয়ে পড়েছে। এই জাল দলিলের ফাঁদে পড়ে কত মানুষ যে তার সহায়-সম্পত্তি হারিয়েছে তার হিসাব নেওয়াও কষ্টকর।


জাল দলিল তৈরির সহায়তাকারী

উপরোক্ত বিষয়গুলো করা হচ্ছে নিবন্ধনকৃত নয় এমন দলিলের ক্ষত্রে। কিন্তু রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত দলিলও অনেক ক্ষেত্রে জাল করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে এই সকল জালিয়াতি চক্রের সাথে সরকারি দপ্তরের কর্মচারী ও কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছেন। কোনো দলিল রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রি হলে তা রেকর্ড রুমে সংরক্ষিত থাকে। জেলার রেকর্ডরুম গুলোতে দেখা যায় অনেক বালাম বইয়ের পৃষ্ঠা সংশ্লিষ্ট বইয়ে নেই বা ছেঁড়া, কোথাও কোথাও দেখা যায় কালি দিয়ে লেপ্টে দেয়া আছে। দেখা যায় সরকারি কর্মচারীদের যোগসাজসে জালিয়াত চক্র বালাম বইতে যে নম্বর পৃষ্ঠার কোনো রেফারেন্স নাই সেই সব পৃষ্ঠার নম্বর দিয়েই জাল দলিল তৈরি করছে। কেউ কোনো চ্যালেঞ্জ করলে দেখা যায় ঐ বালাম বইয়ের পৃষ্ঠাটি নষ্ট বা ছেঁড়া; অথচ সেই পৃষ্ঠা কোনোদিনই কেউ খুঁজেও পাবে না। ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস ও স্যাটেলমেন্ট অফিসের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা দ্বিগুণ উৎসাহে এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে।


‘কসবার দলিল’

নোয়াখালীর আদালত পাড়ায় জাল দলিল বিষয়ে ‘কসবার দলিল’ বলে একটি মুখরোচক কথা প্রচলিত রয়েছে। কোনো দলিল জাল বলে সন্দেহ হলেই সেই দলিলকে আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সেটিকে কসবার দলিল বলে থাকেন। স্বাধীনতার পরে নোয়াখালীতে বেশ কিছু দলিল আদালতে দাখিল করা হয় যা ছিল কসবা রেজিস্ট্রি অফিসে নিবন্ধনকৃত। এর পরিমাণ একসময় বেশ বেড়ে যায়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কসবা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস আগুনে পুড়ে ভস্মিভূত হয়ে যায়। সেই অফিসের বালাম বইসহ কাগজপত্র রেকর্ড সম্পূর্ণই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ সুযোগটি গ্রহণ করে জালিয়াত চক্র। তারা পুরানো কাগজপত্র দিয়ে সেই কসবার অফিসের উপর জাল দলিল তৈরি করে। সেই দলিল যাচাই বাছাই করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ রেকর্ড বই বলতে কোনো কিছু অবশিষ্ট না থাকায় আদালত যাচাই বাছাইয়ের জন্য তদন্ত করতেও পারে না। এ ক্ষেত্রে জালিয়াত চক্রেরই পোয়াবারো!

উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর সীমানায় চন্দ্রগঞ্জের পূর্ব বাজারে পাশাপাশি একটি স্কুল ও একটি মাদ্রাসা রয়েছে। দুটো প্রতিষ্ঠানের জমিই মালিকানা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। মূলত: জমিগুলো এক সময় ছিলো হিন্দু সম্পত্তি। উভয় প আদালতে তাদের জমির মালিকানার জন্য দলিল প্রদান করে। মজার ব্যাপার হচ্ছে দুই পই জাল দলিল কোর্টে উপস্থাপন করে। দুই পরে দলিলই কসবার দলিল। যেহেতু এ সম্পত্তি এক সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের ছিলো। ’৪৭ সনে দেশ বিভাগের সময় তারা এ সম্পত্তি ফেলে চলে যায়। স্বভাবতই জমিটি অর্পিত সম্পত্তি হয়ে যায়। কিন্তু স্কুল ও মাদ্রাসার কর্তৃপ দেশ বিভাগের পূর্বের তারিখ উল্লেখ করে কসবার জাল দলিল তৈরি করে নেয়। এখন আদালতে উপস্থাপনের পর দু’টাই জাল বলে ধরা পড়ে যায়। শেষে উপায়ান্ত না দেখে উভয়ই নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করে মামলার নিস্পত্তি ঘটায়।

এরকম আরেকটি সমঝোতার খবর জানা যায় নোয়াখালীর জীন্ততলী নামক এলাকায়; এখানে একটি বিবাদমান সম্পত্তি বিষয়ে অ্যাডভোকেট মনছুরুল হক খসরু জানান, “ঐ জমিটি একটি হিন্দু মালিকের ভূমি। দেশ বিভাগের পর তিনি চলে গেলে দু’জন মুসলিম সে জমি দখল করে নেয়। পরবর্তীতে তারা উভয়ে দুটি জাল দলিল কোর্টে উপস্থাপন করে উভয়ই ঐ সম্পত্তির মালিকানা দাবি করেন। আমি দু’জনকেই শান্তিপূর্ণভাবে মীমাংসার মাধ্যমে ভোগ দখল করার পরামর্শ দিই।”


ত্রুটিপূর্ণ খাস জমি বন্দোবস্ত নীতিমালা

সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত নীতিমালাটি খুবই ত্রুটিপূর্ণ। নোয়াখালীর চরাঞ্চলে খাস জমি বন্দোবস্তের জন্য দ্বৈত পদ্ধতি চালু রয়েছে। একদিকে প্রশাসন অন্যদিকে চর উন্নয়ন সংস্থা ‘সিডিএসপি’। দেখা যায় একই জমি একবার প্রশাসন বন্দোবস্ত দিয়েছে একজনকে, আবার সিডিএসপি দিয়েছে অন্যজনকে। এভাবে একই জমি দু’জন বা দু’পক্ষকে দিয়ে দেওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। আইনজীবীদের ভাষ্য থেকে জানা যায়, নোয়াখালী আদালতে এ রকম প্রায় দু’শ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। চরাঞ্চলের খাস জমি নিয়ে সবচেয়ে বেশি জাল দলিল সৃষ্টি হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে সরকার হচ্ছে সবচেয়ে দুর্বল পক্ষ। আমলাদের দুর্নীতিগ্রস্ততার সুযোগ নিয়ে প্রভাবশালীরা বিভিন্নভাবে জাল দলিল তৈরি করে সরকারি ভূমি গ্রাস করে নিচ্ছে।


কেসস্টাডি

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার অধিবাসী মৃত কানু মোহন ঘোষের দুই পুত্র সুভাষ চন্দ্র ঘোষ ও লক্ষণ চন্দ্র ঘোষ অভিযোগ করেন যে, তারা চাটখিলের অন্তর্গত ১০১ নং রৌহিত আলী মৌজায় ৫ নং তৌকির ২ নং খতিয়ানে এবং ১৫০/১ নং খতিয়ানে মোট ১.৪৭ ডিং ভূমির মালিক। কিন্তু মৃত জয়নাল আবেদীনের ওয়ারিশ শফিউল্লাহ ও অলিউল্লাহ দাবি করেন, ঐ জমি মৃত জয়নাল আবেদীন মৃত কানু মোহন ঘোষ থেকে ছাপ কবলা মূলে অনেক আগেই খরিদ করে। এর প্রমাণ স্বরূপ তারা কবিরহাটের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের একটি দলিল আদালতে উপস্থাপন করে। সুভাষ চন্দ্র ঘোষ ও লক্ষণ চন্দ্র ঘোষ ঐ দলিলের বিরুদ্ধে জাল দলিল উল্লেখ করে আদালতে মামলা করে। বাদীগণ অভিযোগ করে, আইনের ফাঁক দিয়ে সম্পূর্ণ জালিয়াতের মাধ্যমে কবিরহাট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে জাল দলিল তৈরি করা হয়েছে।


সুপারিশ

জাল দলিল নোয়াখালীর পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনাকে কলুষিত ও বিতর্কিত করে ফেলেছে। জাল দলিলের জন্য অনেক ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থাপনাটি স্থবির ও অকার্যকর হয়ে পড়েছে। আইনজীবী, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তি এবং ভুক্তভোগীদের সাথে আলোচনা করে এ সমস্যা সমাধানে নিম্নলিখিত সুপারিশ প্রস্তাব করা হয়েছে

  1. ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস ও সেটেল্টমেন্ট অফিস একই মন্ত্রণালয়ে এবং একই ব্যবস্থাপনায় রাখা দরকার।
  2. কোনো দলিল সম্পাদনের পূর্বে দলিল প্রদানকারীর সম্পত্তির মালিকানা নিশ্চিত করতে হবে।
  3. দুর্নীতি পরায়ন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
  4. সকলের ক্ষত্রেই রেজিস্ট্রিকরণের সময় টিপসই গ্রহণ ও সংরণ করতে হবে।
  5. জাল দলিল প্রণেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
  6. নোয়াখালীর প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে কী পরিমাণ খাস জমি রয়েছে তা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সর্বসাধারণের জানার সুযোগ থাকতে হবে।
  7. ভূমি রেজিস্ট্রেশন ও রেকর্ড সংরণ ব্যবস্থাকে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত আধুনিক পদ্ধতির আওতায় আনা যেতে পারে।


     ম্যস লাইন মিডিয়া সেন্টার(এম এমসি) কতৃক ফেলোশিপের আওতায় এই রিপোর্টগুলো তৈরী করা হয়েছে।


--Foez 06:44, 13 January 2010 (UTC)