ঘৃতকুমারী
'ঘৃতকুমারী'
ঘৃতকুমারী
মাহমুদুল হক ফয়েজ
উদ্ভিদের নাম: ঘৃতকুমারী/তরুনী Ghritokumari
স্হানীয় নাম: ঘৃতকুমারী/ঘৃত কম্মল।
বোটানিক্যাল নামঃ-Aloe indica Royle/Aloe vera
ফ্যামিলি নামঃ- Liliaceae
ব্যবহার্য অংশ: পাতা), ফুল।
রোপনের সময়: আষাঢ় মাসের প্রথম দিকে।
মাটির ধরন: বেলে-দোঁআশ মাটিতে ভাল জন্মে।
উত্তোলনের সময়: দুই তিন মাস পর থেকেই গাছের পাতা কাটা যায়।
আবাদী/অনাবাদী/বনজ: এটি আবাদী অনাবাদী বনজ সব ধরনের হয়ে থাকে। তবে আবাদী ঔষধী উদ্ভিদ হিসাবে এটি সমাদ্রিত।
প্রাপ্তির স্থান: এই গাছটি ভারত উপমহাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়, দক্ষিন ভারতের বনে জঙ্গলে নানান প্রজাতীর ঘৃতকুমারি অযত্নে জন্মে। গাছটির আদি জন্মস্হান আরবে, বর্তমানে এই দেশে এবং ভারতের কিছু জায়গায় পাওয়া যায় ও ঔষধী উদ্ভিদ হিসাবে আবাদ করা হয়।
চাষাবাদের ধরন: সারীবদ্ধ করে লাগাতে হয় এবং সারা বছর জুড়ে এর থেকে নতুন নতুন পাতা জন্মে ।
ঘৃত কুমারী গাছের পরিচিতি:এটি ঔষধী গাছ হিসাবে বেশ পরিচিত, দেড় থেকে দুই হাত লম্বা হয়, পাতা নিচের দিকে কিছুটা গোলাকার, উপরের দিকে কিছুটা ভোঁতা থাকে, হালকা সবুজ রং ধারণ করে, পাতার ভিতরটায় শাষে ভরা, শাষটা আঠার মতো চটচটে, শাষটা খেতে একটু তিতে লাগে এবং গাছ থেকে একটা আঠা বের হয় তা রোদে শুকিয়ে মুশাব্বর তৈরি করা হয়। এই মুশাব্বর রোদে শুকিয়ে বিভিন্ন রোগে ব্যবহার করা হয়। গাছে যে ফুল ধরে তার ডাটা একটু লম্বা হয়, ফুলের রং লেবুর মতো হয়, শীতের শেষ দিকে গাছে ফুল ফুটতে শুরু করে এবং ফাল্গুন চৈত্র মাসে ফল ধরে।
মুশাব্বর: ঘৃত কুমারী গাছ থেকে এক ধরনের হলুদ রং এর আঠা বের হয়, এই আঠাকে
ঔষধি গুণাগুণ: উদ্ভিদটির নানান ঔষধী গুনাগুন রয়েছে। শুক্রমেহে, গুল্ম রোগে, ঋতু বন্ধে, অগ্নিমান্দ্যে, ক্রিমিতে, শিশুর মল রোধে, অর্শরোগে, চর্মরোগে ঔষধী গুনাগুন রয়েছে।
শুক্রমেহেঃ- প্রধানতঃ যারা শ্লেষ্মাপ্রধান রোগে ভোগেন তাদেরই এ রোগ বেশী হয়। কোঁত দিলে অথবা প্রস্রাব করলে শুক্রস্খলন হয়, এই সব লোকের ঠান্ডা জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বেশী দেখা যায়, শুধু এই ক্ষেত্রেই ঘৃতকুমারীর শাঁস ৫ গ্রাম একটু চিনি মিশিয়ে সকালে বা বিকালে সরবত করে খেতে হবে। অথবা শুধু চিনি মিশিয়েও খাওয়া যায়। ৬/৭ দিন খেতে হবে।
গুল্ম রোগেঃ- গর্ভ হলে পেটে ব্যথা হয়না, আর গুল্মে প্রায়ই কনকনে ব্যথা হয়। তবে এটা যে গুল্ম তা নিশ্চিত হতে হবে। তাহলে ঘৃতকুমারীর শাঁস ৫/৬ গ্রাম একটু চিনি দিয়ে সরবত করে ৩/৪ দিন খেতে হবে।
সামান্য উত্তেজনায় ধাতু/শুক্রাণু স্খলন: যাদের শুক্রাণু পাতলা তাদের জন্য দুই চামচ চটকানো ঘৃতকুমারী পাতার শাষ এবং দুই চামচ চিনি মিশিয়ে শরবত করে ১৫-২০ দিন খেলে পাতলা শুক্রাণু অকারণে স্খলন বন্ধ হবে।
অনিয়মিত এবং অস্বাভাবিক মাসিক হলে: ঘৃতকুমারী পাতার শাষকে ভালভাবে চটকে চালুনীতে/ঝাকীতে পাতলা আবরণ করে একবার শুকানোর পর আরেকবার তার উপরেই পাতলা আবরণ লাগাতে হবে। এভাবে কয়েকবার লাগানোর পরেই আমসত্বের মতো তৈরি হবে। মাসিকের সময় ২/৩ গ্রাম পরিমাণ পানিতে ভিজিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে হবে।
পেটের মল পরিষ্কার করতে: যখন সমস্যা হবে তখন সকালে খালি পেটে টাটকা ঘৃতকুমারী পাতার শাষ ১০/১৫ গ্রামের মতো ঠান্ডা পানির সাথে হালকা চিনি মিশিয়ে শরবত করে খেলে পুরানো মল পরিষ্কার হবে।
অর্শরোগেঃ- এ রোগের স্বভাবধর্ম কোষ্ঠ কাঠিন্য হওয়া। সেটা থাকুক আর নাই থাকুক, এ ক্ষেত্রে ঘৃতকুমারীর শাঁস ৫/৭ গ্রাম মাত্রায় একটু ঘি দিয়ে মিশিয়ে সকালে ও বিকালে দুই বার খেতে হবে। এর দ্বারা দাস্ত পরিষ্কার হবে এবং অর্শেরও উপকার হবে।
- অনেকে সহ্য করতে পারে না উপসর্গ দেখা দিতে পারে, ভয়ের কিছু নেই।
- সাবধানতা: গর্ভবতী মাদের এ সময়ে পেটের পিড়ার জন্য না খাওয়া ভাল, এতে গর্ভপাত হতে পারে।
চিরঞ্জীব বনৌষধী
আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য
২য় খন্ড, পৃষ্ঠা-৩২
মাহমুদুল হক ফয়েজ
মুঠোফোনঃ ০১৭১১২২৩৩৯৯
e-mail:- mhfoez@gmail.com
--Foez 02:55, 1 June 2013 (UTC)