কবিতার ফাঁসি
কবিতার ফাঁসি
মাহ্মুদুল হক ফয়েজ
একটু পরেই শহরের ঠিক মধ্যখানে
একটি কবিতাকে ফাঁসিতে ঝুলানো হবে ।
কবিতার অপরাধ, কবিতা নারীকে সুন্দর
এবং ফুলকে পবিত্র বলেছিলো ।
কবিতার অপরাধ, কবিতা প্রজাপতির ডানায় ডানায়
ফুলের রেনু ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলো ।
কবিতার অপরাধ, কবিতা জ্যোৎস্নার শরীর মেখে মেখে
বাঁশিতে নতুন একটি সুর তুলতে চেয়েছিলো ।
কবিতার অপরাধ, কবিতার বাঁশির সুরে সুরে
কাল ভ্রমর গুলো শষ্য ক্ষেতে ক্ষেতে
পরাগায়নে ব্যস্ত হয়ে উঠেছিলো ।
গতরাতে এর জন্য প্রতিবাদ সভা হয়ে গেছে ;
আকাশের তারা এবং চাঁদ মৌন মিছিল
করতে করতে পৃথিবী প্রদক্ষীণ করে গেছে ।
সকালে একদল প্রজাপতি শিশিরের মধ্যে
রেনুর স্লোগান ছড়িয়ে দিয়ে গেলো ।
আকাশে একদল মেঘ প্লেকার্ড হাতে
প্রতিবাদ সভায় ছুটে এসেছিলো ।
ছুটতে ছুটতে ওরা ক্লান্ত হয়ে কেঁদেছিলো খুব-
কান্না, নদী ও ঝর্ণা হয়ে সমুদ্রে চলে গেছে ।
একটু পরেই শহরের ঠিক মধ্যখানে
একটি কবিতাকে ফাঁসিতে ঝুলানো হবে ।
ফাঁসির উৎসব দেখতে নারী ও নারীর খোঁপায় করে
ফুলেরা আস্তে আস্তে গুরুগম্ভীর ভাবে আসবে ।
কবিতার ফাঁসি হয় গেলে নারী ও ফুলেরা
কবিতার হীম শীতল শরীর
আকাশের নীল গেলাব দিয়ে ঢেকে
জ্যোৎস্নার খাটিয়ায় করে নিয়ে যাবে ।
তারপর ওরা অনন্তকালের জন্য কবিতাকে
ওদের হৃদয়ের মধ্যখানে রেখে দেবে ।
অবশেষে নারী ফুল জ্যোৎস্না প্রজাপতি
এরা সবাই মিলে লিখবে
একটি নতুন ছন্দবদ্ধ সুন্দর কবিতা ।
উৎসর্গ :-
স্বৈরাচারির হিংস্র আক্রোসে যে সকল সূর্য সন্তানেরা সত্য সুন্দরের জন্য
জীবন আত্মহুতি দিয়েছিলো, তাদের বিদেহী আত্মার প্রতি উৎসর্গকৃত ।