Odl

From WikiEducator
Jump to: navigation, search

স্থানীয় বা লোকায়ত জ্ঞান সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ
WikiEducator & EasyNow এর ব্যবহার


জবা

• উদ্ভিদের নাম : জবা

• স্থানীয় নাম : জবা

• ভেযজ নাম /বৈজ্ঞানিক নাম: Habiscus rosa-Sinensis Linn

(হেবিসকাস রোজা-সিনেনসিস লিন)

• ব্যবহার্য অংশ : ফুল, পাপড়ি ও গাছের ছাল

• রোপণের সময় : বর্ষাকাল

• উত্তোলণের সময় : বছরের যে কোন সময় সংগ্রহ করা যায়

• চাষাবাদের ধরণ : গাছের ডাল বর্ষা কালে স্যাঁত স্যাঁতে মাটিতে রোপন করতে হয়

• আবাদী/অনাবাদী/বনজ : আবাদী ও অনাবাদী বনজ সব ধরনের হয়ে থাক। তবে বসত বাটির শোভা বর্ধনে এ গাছ রোপন করা হয়।

• উদ্ভিদের ধরণ : এটি একটি ঝোপ জাতীয় গাছ। সাধারণত: সাত আট ফুট উচ্চতায় হয় থাকে। এর ফুল নানান রঙ্গের হয়ে থাকে । জবা ফুল ঠোঙ্গা আকৃতি, পঞ্চমুখি ও থোকা আকারের হয়ে থাকে।

• ঔষধি গুণাগুণ : জবা ফুলে নানান ঔষধি গুনাগুণ রয়েছে। বমনের প্রয়োজনে, মুত্রাতিসারে, অনিয়মিত মাসিকের স্রাব, মাসিক ঋতুর অতিস্রাবে, চোখ উঠা, মাথায় টাক পোকা, হাতের তালুতে চামড়া উঠা ইত্যাদি

রোগে ঔষধি গুনাগুণ রয়েছে।

• ব্যবহার :

১. বমি করতে চাইলে: হঠাত্‌ কোন কুখাদ্য খাওয়া হয়ে গেলে, যেটা খেতে অভ্যস্ত নয়, যাকে বলা হয় অসাত্ম্য দ্রব্য, যেমন অজান্তে মাছি, চুল অথবা এই রকম ধরনের কোন জিনিস পেটে গিয়েছে, এর পরিণতিতে

বমির উদ্রেগ হয়, অথচ বমি হচ্ছে না; এক্ষেত্রে ৪/৫ টি জবা ফুল নিয়ে বোঁটার সঙ্গে যে সবুজ ক্যালিকাস অংশ থাকে, এই অংশ টাকে বাদ দিয়ে ফুল অংশটাকে পানি ও চিনি পরিমাণমত দিয়ে চটকে সরবত করে দিনে

২/১ বার খেলে বমি হয়ে পেট থেকে ওগুলি সব বেরিয়ে যাবে।

২. ঘন ঘন প্রস্রাব: যারা প্রচুর পরিমানে পানি পান করে আবার ঘন ঘন প্রস্রাব করে অথচ ডাইবেটিস রোগী নয়, এই ক্ষেত্রে জবা গাছের ছালের রস এক চা চামচ নিয়ে পানি সহ কয় দিন খেলে উপকার পাওয়া

যায়। এক কাপ পানির সাথে পরিমান মত চিনি মিশাতে হবে। ৭/৮ দিন খেতে হবে।

৩. অনিয়মিত মাসিকের স্রাব: দুই এক দিন একটু একটু হয়, আবার সময় হয়ে গিয়েছে আদৌ হয়না আবার হয়তো এক মাস বন্ধ হয়ে থাকলো, এ ক্ষেত্রে দু তিনটি পঞ্চমুখী জবা ফুলের কুঁড়ি ও দারুচিনি আধা অথবা

এক গ্রাম এক সঙ্গে বেটে সরবত করে কয়েকদিন খেতে হয়।রসের সাথে এক গ্লাস পরিমান পানি মিশিয়ে সকালে কিছু খাওয়ার পর ৩/৪ দিন খেতে হবে। দিনে একবার, মাসিকের সময়, মাসিক স্বাভাবিক হওয়া অবধি

৩/৪ ইঞ্চি দারুচিনি টুকরা ঋতুকালীন সময়ে দিনে একবার করে রোজ খেতে হবে।

৫. টাক পোকা রোগ: চুল স্বাভাবিক আছে অথচ ফাঙ্গাসে কিছু যায়গা চুল উঠে টাক হয় গেছে এ অবস্থায় জবাফুল বেটে ওখানে লাগালে কিছু দিনের মধ্যে চুল উঠে যাবে। এক /দুইট ফুল বেটে ৭/৮ দিন লাগাতে হবে।

দুই/এক ঘন্টা রাখতে হবে অথবা যতক্ষণ রাখা যায়। দিনের যে কোনো সময়।

৬. চোখ উঠা: চোখের কোনে ক্ষত হয়ে পুঁজ পড়ছে। সে ক্ষেত্রে জবা ফুল বেটে চোখের ভিতরটা বাদ দিয়ে চোখের উপর ও নিচের পাতায় গোল করে লাগিয়ে দিলে উপকার পাওয়া যায়। দিনের যে কোনো সময় এক /দুইট ফুল বেটে ৭/৮ দিন লাগাতে হবে। এক ঘন্টা রাখতে হবে।

৭. হাতের তালুতে চামড়া উঠা: শীত কালে হাতের তালুতে চামড়া উঠে খসখসে হয়ে গেলে জবা ফুল তালুতে মাখলে খুব উপকার পাওয়া যায়। এক /দুটি ফুল হাতের মধ্যেই ডলে ডলে লাগাতে হবে। দিনে দুই তিন বার।

লাগিয়ে স্বাভাবিক কাজ কর্ম করা যাবে। যতক্ষণ সম্ভব রাখা যায়।


সংগ্রহ: চিরঞ্জীব বনৌষধী, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা-১৫৪
আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য


২.অপরাজিতা

• উদ্ভিদের নাম : অপরাজিতা

• স্থানীয় নাম : অপরাজিতা

• ভেযজ নাম /বৈজ্ঞানিক নাম: Clitoria ternatia Linn এটি Popilionaceae এর পরিবার ভূক্ত

• ব্যবহার্য অংশ : ফুল, পাপড়ি, মূল ও গাছের লতা

• রোপণের সময় : বর্ষাকাল

• উত্তোলণের সময় : বছরের যে কোন সময় সংগ্রহ করা যায়

• চাষাবাদের ধরণ : গাছের ডাল বর্ষা কালে সেঁত স্যাঁতে মাটিতে রোপন করতে হয়, ছোট ছোট ধূসর ও কালো বর্ণের বিচি রোদে শুকিয়ে নরম মাটিত রোপন করতে হয়।

• আবাদী/অনাবাদী/বনজ : আবাদী ও অনাবাদী বনজ সব ধরনের হয়ে থাকে। তবে সাধারণত: বসত বাটির শোভা বর্ধনে বাড়ির আঙ্গিনায় এ গাছ রোপন করা হয়।

• উদ্ভিদের ধরণ : এটি একটি লতা জাতীয় গাছ। অনেক লম্বা হয়ে থাকে। এর ফুল দুই রঙ্গের-সাদা এবং নীল হয়ে থাকে।কোনো অবলম্বন পেলে এটি বেড়ে উঠে।

• ঔষধি গুণাগুণ : অপরাজিতার ফুল, পাপড়ি, মূল ও গাছের লতায় নানান ঔষধি গুনাগুণ রয়েছে।

মুর্ছা, হিস্টিরিয়া, বয়:সন্ধি কালীন উন্মাদ রোগ, গলগন্ড রোগ, ফুলা রোগ, আধকপালে ব্যথা শুষ্ক কাশি, স্বরভঙ্গ, ঘন ঘন প্রস্রাব, ইত্যাদি রোগে ঔষধি গুনাগুণ রয়েছে।

• ব্যবহার :

১. মুর্ছা বা হিস্টিরিয়া: আক্রমনের সময় এর মূল গাছ ও পাতা থেঁতে ছেঁকে ১ চা চামচ রস কোনো রকমে খাইয়ে দিলে সেরে যায়।

২. বয়:সন্ধি কালীন উন্মাদ রোগ: এর মূলের ছাল ৩ থেকে ৬ গ্রাম পরিমাণ নিয়ে শিলে বেটে দিনে ২ বার আতপচাল ধোয়া পানি দিয়ে খেতে হয়। পানির পরিমাণ ১/৪ লিটার । ৭ দিন খেতে হয়।

৩. গলগন্ড রোগ: এর মূল ৫/৬ গ্রাম পরিমাণ ঘি দিয়ে শিলে পিষে অল্প মধু মিশিয়ে সকাল বিকাল ৭ দিন খেলে ভাল হয়ে যায়।

৪. ফুলা রোগ: পুরাণো ফুলা রোগে নীল অপরাজিতার পাতা মূল সহ বেটে অল্প গরম করে লাগালে ফুলা সেরে যায়। ফুলা বন্ধ হওয়া পয্র্ন্ত সকালে লাগিয়ে যতক্ষণ রাখা যায় রাখতে হবে।

৫. ঘন ঘন প্রস্রাব: শিশু অথবা বয়ষ্ক যারা ঘন ঘন প্রস্রাব করে এই ক্ষেত্রে সাদা বা নীল অপরাজিতা গাছের মূল সহ রস করে এক চা চামচ প্রত্যহ ২ বার একটু সামান্ন দুধ মিশিয়ে সকাল বিকাল এক সপ্তাহ্‌ খেলে

উপকার পাওয়া যায়।

৬. স্বরভঙ্গ: সমস্ত লতা পাতা দশ গ্রাম পরিমাণ থেঁতলে ৪/৫ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে দিনে ৩/৪ বার ১৫ মিনিট গারগেল করলে সেরে যায়। ৪/৫ দিন করতে হবে।

৭. শুষ্ক কাশি: অপরাজিতা মূলের রস ১ চা চামচ আধা কাপ অল্প গরম পানিতে মিশিয়ে নিতে হবে। সেই পানি ১০/১৫ মিনিট মুখেপুরে রেখে ৭ দিন , দিনে ৩বার গারগেল করতে হবে। খাওয়া যাবেনা।

৮. আধকপালে ব্যথা: এ রোগে এক টুকরা মূল ও গাছ থেঁতলে তার রসের নস্যি দিনে দু’তিন বার নিলে সেরে যায়। হাতের তালুতে কয়ফোটা নিয়ে নাক দিয়ে টেনে নিতে হয়। এটাই নস্যি। ব্যথা হলে দিতে হবে।


সংগ্রহ: চিরঞ্জীব বনৌষধী, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা-৯০
আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য


মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ
cell: ০১৭১১২২৩৩৯৯
e-mail: mhfoez@gmail.com