জলবায়ু পরিবর্তন ও নোয়াখালীর উপকূল

From WikiEducator
Jump to: navigation, search

জলবায়ু পরিবর্তন ও নোয়াখালীর উপকূল

মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ



গত কয় বছর ধরে বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে পরিবেশ বিপর্যয়ের নানান আশঙ্কার কথা শুনা যাচ্ছে। তাঁরা বলছেন, পৃথিবীতে নেমে আসছে মারাত্মক দুর্যোগ। উষ্ণ হয়ে উঠছে পৃথিবী, ঝড় ঝঞ্ঝা জলোচ্ছাস বেড়ে যাচ্ছে, মানুষের রোগশোক বাড়ছে। সবচেয়ে ভয়াবহ খবর হলো বায়ুমন্ডল উত্তপ্ত হওয়ার কারনে সাগর ফুলে ফেঁপে উঠছে। ফলে সাগর পাড়ের দেশগুলোডুবে যাবে। ডুবে যাবে সে দেশের মানুষ আর প্রতিবেশ। সব চেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল। এ উপকূলীয় আঞ্চলের মধ্যে নোয়াখালী অন্যতম।

শত বছর ধরে নোয়াখালীর উপকূল ভাঙ্গা গড়ার খেলায় মত্ত। প্রকৃতির এ অনবদ্য খেলায় কিছু এলাকার ভূমি ভেঙ্গে ভেঙ্গে সাগরে হারিয়ে গেছে। পঞ্চাশের দশকে হাজার বছরের সমৃদ্ধ নোয়াখালী শহর সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায় সাগর গর্ভে। তখন নোয়াখালী শহর অস্থায়ী ভাবে স্থানান্তরিত কর হয় দশ কিলোমিটার উত্তরে মাইজদীতে। সে সময় ভাঙ্গনের কবলে পড়ে স্বন্দ্বীপ প্রায় নিশ্চিহ্ন হতে চলেছিলো। লক্ষীপুরের রামগতি ভাঙ্গছে অবিশ্বাস্য গতিতে।

এক সময়ের প্রকৃতি ছিলো অসাধারণ সুন্দর। মানুষের সে আদি জীবন ছিল প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থানের এক সুন্দর চিত্র। প্রকৃতির সঙ্গে মিলে মিশে মানুষ তার জীবন অতিবাহিত করেছে।

প্রকৃতি গাছ থেকে ফল ফেলে দিয়ে আহার জুগিয়েছে, ঝরনার স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ জল দিয়ে তৃষ্ণা মিটিয়েছে, গাছের বাকল দিয়ে গাত্রাবরণ সৃষ্টি করেছে, গাছের ছায়ায় বা পাহাড়ের গুহায় আবাসন দিয়েছে, উত্তাপ দিয়ে শীত নিবারণ করেছে। ঝরে পড়া পাতায় পাথর ঠুকে আগুন জ্বালিয়ে রান্নার ব্যবহারও শিখিয়েছে এই প্রকৃতি। মাটি দিয়ে পাত্র তৈরি হয়েছে, বিভিন্ন আকারের পাথর দিয়ে সংরক্ষণের পাত্র তৈরি হয়েছে। মানুষের প্রয়োজনে প্রকৃতি ছিল উদার। নানা রকমের ফুলের সুবাস মনকে প্রফুল্ল করেছে। কিন্তু প্রকৃতির এ অবারিত দানকে আমরা অবজ্ঞা করে গেছি। আজ আমরা সম্ভোগের তাড়নায় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে।উন্নয়নের জন্য যে প্রযুক্তির উদ্ভব হয়েছিল, মানুষের সম্ভোগ মেটাতে যে কৃত্রিম সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি করেছিল, তার সবই প্রকৃতিকে দীন করেছে। গত ৫০ বছরে পৃথিবীর মানুষ, বিশেষ করে উন্নত দেশের মানুষ প্রকৃতি থেকে পাওয়া সম্পদ যে পরিমাণ ব্যবহার করেছে ভোগের জন্য, উত্পাদন-দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য, পুঁজিপণ্য নির্মাণে; এর আগে ১০ হাজার বছরে প্রকৃতির সম্পদ এ মাত্রায় ব্যবহূত হয়নি। উন্নয়নের নামে আমরা যত উন্মত্ত হয়েছি, তত আমরা আমাদের ভবিষ্যেক বিপন্ন করেছি। বহু নবায়নযোগ্য সম্পদ হারিয়ে গেছে, বহু প্রজাতি বিলুপ্ত হয়েছে। অনেক ফুলের সুবাস আর পাওয়া যাবে না। অনেক ফলের স্বাদ আর আমরা জানব না। অনেক মানুষ প্রকৃতির এমন বিপন্ন অবস্থার কারণে, স্বাস্থ্যগত কারণে আজ ঝুঁকির মুখে, খাদ্যনিরাপত্তা আজ নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। জীবনের নিরাপত্তা সম্পদ সীমাবদ্ধ হয়ে প্রতিযোগিতার নামে আজ প্রশ্নবিদ্ধ।বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের যে মাত্রা যোগ করেছে, তাতে ওজোনস্তর পাতলা হয়ে আসছে, ফলে নিরাপদ তাপের উত্স সূর্যালোক আর নিরাপদ থাকতে পারবেনা।

সংগত কারণে বলা যায়, শিল্পোন্নত দেশ গুলোই এর জন্য প্রধান দায়ী। আবার উন্নয়নশীল দেশের অগ্রগামীরা দাবি করছে, উন্নয়নের স্বার্থে তাদেরকে কার্বন নির্গমনের মাত্রা বেঁধে দেওয়া অনুচিত হবে। আমরা যারা উন্নয়নের নিচু সীমায় আছি তারা বলছি, উষ্ণায়ন কমিয়ে আনতে হবে। আমাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। উন্নত দেশগুলো বলছে, নিম্ন কার্বন-প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বিনিয়োগ দরকার। সে জন্য সময়েরও দরকার। বাতাসের কার্বনের মাত্রা কমাব, কিন্তু কী হারে কত দিনে কমাব তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব নয়। প্রশ্ন উঠেছে বিজ্ঞানীদের গবষেনায় পাওয়া বিশ্বে কার্বনের সহনীয় মাত্রা ৩৫০ পিপিএমের প্রতিশ্রুতি কি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো পাবে? ক্ষতিগ্রস্ত দেশের জন্য যথেষ্ট অর্থায়ন কি হবে?

গত ডিসম্বেরে কোপেনহেগেনে বিশ্ব জলবায়ু সন্মেলন হয় গেলো। এর সফলতা জন্যমোটা দাগে তিনটি মাপকাঠিতে পরিমাপ করা হয়েছিলো: চুক্তিটি কি ন্যায্য হবে? ন্যায্য হতে হলে ধনী ও শিল্পোন্নত দেশগুলোকে তাদের কার্বন ঋণ ও ঐতিহাসিক দায়িত্ব স্বীকার করতে হবে। অর্থাত্ ক্রমোষ্ণ পৃথিবীর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়ানো এবং এর অনিবার্য ক্ষতিকর প্রভাবের তীব্রতা কমাতে উন্নয়নশীল বিশ্বকে অর্থ সরবরাহ করতে হবে। এটি কি উচ্চাভিলাষী হবে? এর মানে হলো, বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ২০১৫ সালের পর আর বাড়তে দেওয়া যাবে না; শিল্পোন্নত দেশগুলোকে ২০২০ সাল নাগাদ ৪০ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে সম্মত হতে হবে এবং তাদের প্রচলিত ব্যবসার ধরন থেকে সরে যেতে হবে।

এটি কি বাধ্যবাধকতার হবে? আইনগত বাধ্যবাধকতার? জাতিসংঘের আলোচনার ইতিহাসে রাজনৈতিক চুক্তির ভূরি ভূরি দেখা মিলবে, যেগুলোর মূল্য দেনদরবারের জন্য ব্যয়িত কার্বন বা বিমান ভাড়ার অর্থমূল্যেরও সমান নয়। দুনিয়াকে অধিকতর ন্যায়ভিত্তিক করার জন্য ন্যায্য, উচ্চাভিলাষী ও বাধ্যবাধকতার চুক্তি এক অবিশ্বাস্য সুযোগ। এমন চুক্তি করা গেলে ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্ব-অর্থনীতিতে প্রায় ৩০ লাখ নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব হতে পারে। পরিচ্ছন্ন, নির্ভরযোগ্য ও নবায়ন-উপযোগী জ্বালানি প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে ২০০ কোটি মানুষের জ্বালানি-দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব হতে পারে। নানা ধরনের বায়ুদূষণের অবসান ঘটিয়ে সবার স্বাস্থ্যসুবিধা বয়ে আনা যেতে পারে। পৃথিবীর অনেক অশান্ত স্থানে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় তা সহায়ক হতে পারে। সম্পদকেন্দ্রিক লড়াই ও জ্বালানি রাজনীতিকে বিশ্বের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের বাইরে নিয়ে যেতেও সহায়ক হতে পারে।

ন্যায়বিচার ও শান্তি অত্যাবশ্যক। নিয়ন্ত্রণহীন জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর অবিশ্বাস্য চাপ তৈরি করবে এবং পানীয় জল, খাদ্য উত্পাদন ও বাসযোগ্য ভূমির পরিমাণ অনেক কমে যাবে। সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হবে দরিদ্ররা। পৃথিবীর ৬৮০ কোটি মানুষের কেউই বাদ যাবে না।

বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আমরা যদি এখনই সক্রিয় না হই, আজ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ছিন্নমূল হবে। আমাদের সন্তানেরা, তাদের সন্তানেরা জলবায়ুর ফল ভোগ করবে। বৈজ্ঞানিক মতামত জোরদার হচ্ছে, এর ফলে পৃথিবী কার্যত বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।

দুনিয়াকে যারা বিষিয়ে তুলেছে, যারা জলবায়ুর বিপর্যয় ঘটিয়েছে, তারা কোপেনগেহেনে জড়ো হয়েছিলো এটাই বলার জন্য যে, বৈজ্ঞানিক হুঁশিয়ারির তোয়াক্কা না করে তারা তাদের জ্বালানো-পোড়ানো চালিয়ে যাবে। বিশ্ব রক্ষায় তারা কোনো চুক্তিতে সই করতে না পারলেও বিশ্বের নিচু দ্বীপগুলো, হিমবাহগুলো, উত্তর মেরু এবং কোটি কোটি মানুষের ভাগ্যে তারা মৃত্যুর সিলমোহর মেরে দিয়েছে।

আমরা যারা খোলা চোখে জলবায়ু সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম, তারা অবাক হইনি। প্রতিদিনই বিজ্ঞানীমহল, উন্নয়নশীল দেশ ও বিক্ষোভকারীরা পৃথিবীকে তাতিয়ে তোলা গ্যাস নিঃসরণ কমানোয় অনেক বাস্তব ও চৌকস সমাধানের কথা তুলেছে। কিন্তু উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের সরকারগুলো ভেটো দিয়ে সেগুলোকে এক দাগে বাতিল করে দিয়েছে। কিন্তু বিশ্বকে বাঁচাতে আমাদের প্রয়োজন সেগুলো আবার তুলে ধরা।

বাতিল হওয়া প্রথম সমাধান: একটি আন্তর্জাতিক পরিবেশ আদালত প্রতিষ্ঠা করা। কোপেনহেগেনে কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়টি দেশগুলোর মর্জির ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কোনো সরকার প্রতিশ্রুতি না রাখলে কোনো শাস্তি হবে না, কেবল মৌখিক কিছু নিন্দা ছাড়া। কিয়োটো প্রটোকল স্বাক্ষর করেও কানাডা নিঃসরণ বাড়িয়েছিল ২৬ শতাংশ। কিন্তু কেউ তাদের কিছু বলেনি। কোপেনহেগেনের পরও এ জাতীয় ঘটনা শত শত ঘটতে থাকবে।

দ্বিতীয় সমাধান: জীবাশ্ম জ্বালানি তথা গ্যাস-তেল-কয়লাকে মাটির তলাতেই রেখে দেওয়া। উন্নত দেশের সরকারগুলোর ভণ্ডামি এখানেই যে, একদিকে তারা বলছে, তারা ব্যাপক হারে জ্বালানি পোড়ানো কমাতে চায়, অন্যদিকে নতুন নতুন খনি থেকে জ্বালানি তুলতে তারা মরিয়া। তাদের এক হাতে আগুনের অস্ত্র আর আরেক হাতে অগ্নিনির্বাপক—এ দুইয়ের কোনো একটি জিতবে। নেচার পত্রিকা বলছে, দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকা তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে চূড়ান্তভাবে আমরা কেবল আবিষ্কৃত তেল-গ্যাস-কয়লার ৬০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করতে পারব না। সুতরাং যেকোনো জলবায়ু চুক্তির গোড়াতেই চিরতরে নতুন করে জীবাশ্ম জ্বালানি অনুসন্ধান নিষিদ্ধ করে দিতে হবে। ফ্রেন্ডস অব দি আর্থ সংগঠনের আন্তর্জাতিক সভাপতি নিমো বাসী যেমন বলেছেন, ‘কয়লা গহ্বরের ভেতরই থাকুক, তেল থাকুক মাটির তলায়।’

তৃতীয় সমাধান: জলবায়ু ঋণ। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য ৭০ শতাংশ দায়ী ধনী দেশগুলো। কিন্তু দুর্ভোগের ৭০ শতাংশই ভোগ করতে হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে। হল্যান্ড সমুদ্রের প্লাবন ঠেকাতে বিরাট বিরাট বাঁধ বানাতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের নিয়তি কি কেবলই ডুবে যাওয়া? যে দায়ী, সে খেসারত দেবে না, নির্দোষই শাস্তি পাবে—এ কেমন নিষ্ঠুর বিধান?

আমাদের জলবায়ুর ঋণ তাই শুধতে হচ্ছে গরিব দেশগুলোকে। জলবায়ু সম্মেলনে এই প্রথমবারের মতো গরিব দেশগুলো ক্ষোভে উঠে দাঁড়িয়েছিলো সে সন্মেলনে। তাদের সম্মিলিত প্রতিনিধি ঘোষণা করলেন, ‘যে ক্ষতিপূরণের কথা বলা হচ্ছে, তা দিয়ে আমাদের লাশগুলোর দাফনের খরচও উঠবে না।’ এত দিন বলা হতো পরিবেশবাদী আন্দোলন ধনীদের শৌখিনতা কিন্তু এবার তা গরিবদের বাঁচার আন্দোলনে পরিণত হলো। অন্যদিকে কোপেনহেগেন সম্মেলনের প্রধান বিতর্ক হয়ে উঠল, সামান্য যেটুকু গ্রিনহাউস গ্যাস পৃথিবী সহ্য করতে পারবে, সেটুকু ব্যবহারের অধিকার কার হবে? ধনী দেশগুলোকে বুঝতে হবে, তারা তাদের কোটা শেষ করে ফেলেছে। এর পরও জলবায়ু ঋণের ধারণা তারা মানতে রাজি নয়। কীভাবে তারা আশা করে, যেখানে তারা ন্যায়বিচারের প্রাথমিক যুক্তিটিও মানতে চাইছে না, সেখানে কীভাবে গরিব দেশগুলো তাদের তৈরি ঘোষণায় আস্থা রাখবে? কেন গরিবেরাই সব সইবে?

যারা ওপরে বলা এই সমাধানগুলো অবাস্তব বলে আখ্যা দেয়, তারা নিজেরাই অবাস্তবতার মধ্যে আটকে আছে। পৃথিবীর প্রাকৃতিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলব, কিন্তু সভ্যতা হেসে-খেলে চলতে থাকবে, তা হয় না। ধনী দেশগুলোর পছন্দের ‘পুষিয়ে নেওয়া’, কার্বন-বাণিজ্য কিংবা বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন সংগ্রহ করার মতো পদ্ধতিগুলো কোনো কাজেই আসবে না। সত্যিকার ওই সমাধানগুলোই পারে পৃথিবীকে আবার শীতল করতে। তার জন্য আমাদের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আমাদের পিতা-পিতামহরা এর চেয়ে বড় ত্যাগ স্বীকার করে গেছেন।

জলবায়ু সম্মেলন চলার পুরোটা সময় নিচুভূমির দেশগুলোর প্রতিনিধিরা এসব বাস্তব সমাধান জীবনরক্ষার ভেলার মতো আঁকড়ে ধরে ছিলেন। কারণ, তাঁরা জানেন, সমুদ্রের ঢল থেকে তাঁদের দেশ ও মানুষকে বাঁচানোর এটাই পথ। এই দেশগুলোর প্রতিনিধিদের দিকে তাকিয়ে অস্বাভাবিক অনুভূতি হয়। তাঁরা সবাই ছিলেন গম্ভীর ও শান্ত প্রকৃতির মানুষ, তাঁদের চোখে ছিল বিষণ্নতা। নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচানোর দাবি নিয়ে তাঁরা কোপেনহেগেনে এসেছিলেন। তাঁরা প্রবল চেষ্টা করে গেছেন, নিজেদের দাবির পক্ষে ব্যবহার করেছেন জটিল বৈজ্ঞানিক তথ্য ও তত্ত্ব এবং মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসাময় কবিতা ও গান। কিন্তু সবকিছুই উপেক্ষিত হলো। এ সমস্ত কিছু বিচেনায় নোয়াখালীর মত সমুদ্রোপকূলীয় জেলার জন্য এক মারাত্মক দুর্যোগের আশঙ্কা করছে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। তাঁরা আশঙ্কা করছেন এর ফলে কয়েক লক্ষ মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে। লক্ষ লক্ষ একর ফসলী জমি সাগরের অথই জলে চিরতরে নিমজ্জিত হয়ে যাবে। ফলে এ অঞ্চলে দেখা দেবে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ। তাই আগাম দুর্যোগ থেকে বাঁচার জন্য আমাদের এখন থেকে সোচ্চার হত হবে।

পৃথিবীকে বাঁচাতে নতুন জ্বালানি-ব্যবস্থায় আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে। জলবায়ু বিপর্যয়মুক্ত সুখী ও প্রাচুর্যময় জীবন যাপন করার বিকল্প পথ অনুসন্ধান করত হবে।

মাহমুদুল হক ফয়েজ
নিয়মিত লেখক,
নোয়াখালী ওয়েব

   তথ্য সূত্র:-
   ·	দ্যা নিউইয়র্ক টাইমস থেকে নেওয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আহসান হাবীব।
      কুমি নাইডু: পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিসের নির্বাহী পরিচালক।
   ·	ড.মোজাফ্ফর আহমদ: অর্থনীতিবিদ। সভাপতি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।
   ·	ব্রিটেনের দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট থেকে নেওয়া: ইংরেজি থেকে অনুবাদ ফারুক ওয়াসিফ
      জোনাথন হারি: ব্রিটিশ সাংবাদিক। 
   ·	স্পিগেল অনলাইন থেকে নেওয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আহসান হাবীব
      মার্কাস বেকার: জার্মান সাংবাদিক।
   ·	ড. আশরাফ মাহমুদ দেওয়ান: সহকারী অধ্যাপক, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
   ·	পরিবেশ বিষয়ক নিজস্ব বিভিন্ন নিবন্ধ থেকে


--Foez 16:13, 13 January 2010 (UTC)